মডিউল ৩: মানবতত্ত্ব — মানুষের বিষয়ে ঈশতাত্ত্বিক শিক্ষা (Module 3 - Anthropology: The Doctrine of Man)
ঈশ্বরের সাদৃশ্যে মানুষ
ধরুন আমি আপনাকে একটি প্রশ্ন করি—একটি পাথরের সাথে একটি ফল গাছের পার্থক্য কী? আপনি ভাবতে পারেন, “পাথর তো নড়ে না—এটি শক্ত, এটি একই রকম থাকে। আর ফল গাছ তো বেড়ে ওঠে। এটি মাটির ভেতর থেকে গজায়, পূর্ণ বয়সে পৌঁছে, পাতার উৎপন্ন করে, শীতে সে পাতা ঝরে যায়, আর কয়েক বছরের মধ্যে এটিতে ফল ধরতে শুরু করে।”তা আপনি ঠিকই বললেন। তাহলে, এবার বলুন—একটি গাছ আর একটি মাছির মধ্যে পার্থক্য কী? আপনি বলবেন, “মাছি তো আরও সচল। এটি নড়াচড়া করে, এটি আরও জটিল। মাছির চোখ আছে, এর চলাফেরার ধরণ আছে, এর জীবনকাল তুলনামূলকভাবে ছোট।”এটিও ঠিক। তবে এবার বলুন, মাছি আর কুকুরের মধ্যে পার্থক্য কী? এ ক্ষেত্রেও কিছু মিল আছে—দুজনই সচল প্রাণী। কিন্তু কুকুরের সক্ষমতা অনেক বেশি, তাই না? কুকুর এমন অনেক কিছু করতে পারে, যা মাছি করতে পারে না। কুকুর মানুষের সাথে সম্পর্ক তৈরি করতে পারে। আমরা কুকুরকে পোষ মানাতে পারি, তাকে বিভিন্ন কৌশল শেখাতে পারি ইত্যাদি। তাহলে এবার বড় প্রশ্ন—কুকুর আর মানুষের মধ্যে পার্থক্যটা কী? অর্থাৎ, কী কারণে একজন মানুষকে মানুষ বলা হয়? আপনি বলতে পারবেন না, “মানুষ সচল”তবে কুকুরও তো সচল। দুজনেই দৌড়াতে পারে, খেতে পারে, ব্যথা অনুভব করতে পারে, এমনকি সঙ্গ দেওয়ার ক্ষমতাও রয়েছে। কুকুরেরও একধরনের যোগাযোগ দক্ষতা আছে—তারা একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করে, আর কিছুটা হলেও মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তাহলে কী বিষয় মানুষকে মানুষ করে তোলে? আপনি কুকুরকে বিভিন্ন কিছু শেখাতে পারেন, আবার মানুষকেও নানা কিছু শেখানো যায়। তাহলে প্রকৃত পার্থক্যটি কোথায়? এটিই হল মূল প্রশ্ন—একজন মানুষ আসলে কী কারণে মানুষ? এর উত্তর বাইবেল দেয়—মানুষ সৃষ্টি হয়েছে ঈশ্বরের প্রতিমূর্তি বা সাদৃশ্যে। এই সত্যই মানুষকে সব প্রাণীজগতের উপরে একটি অনন্য মর্যাদা ও উদ্দেশ্য দেয়।